BARDHAMAN. সকল চাষিকে শস‍্য বীমা আওতায় আসার আবেদন প্রশাসনের : জলমগ্ন জমি পরিদর্শন

6th December 2021 7:31 pm বর্ধমান
BARDHAMAN. সকল চাষিকে শস‍্য বীমা আওতায় আসার আবেদন প্রশাসনের : জলমগ্ন জমি পরিদর্শন


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  নিম্নচাপের  প্রভাবে অসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লেন শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা। গত দু’দিন ধরে চলা লাগাতার বর্ষণে ধান ও আলু চাষের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে  সবজি চাষেও। ফসলের ক্ষতি মাত্রা ছাড়ানোয় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে জেলার চাষিদের। ফসলের ক্ষতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে সোমবার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়,জেলাপরিসদ সভাধিপতি শম্পা ধাড়া ,কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল সহ অন্য আধিকারিকরা।চাষিদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা চাষিদেরকে শস্যবিমার আওতাভুক্ত হওয়ার  ব্যাপারে বিশেষ ভাবে আগ্রহী হওয়ার বার্তা দেন । ধান ও আলু পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল ।চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকেও নিম্নচাপের জেরে কয়েকদিন ধরে  প্রবল বৃষ্টিপাত হয় ।তার উপর জলাধার  থেকেও ছাড়াহয় প্রচুর জল ।জলের তোড়ে কোথাও নদি বাঁধ ভেঙে জমি জলপ্লাবিত হয়।  এছাড়াও বৃষ্টির জলে বিভিণ্ন ব্লকের বিঘার পর  বিঘা  আমন ধান জমি ও সবজি খেত জলে ডোবে। সেই ক্ষতি সামলে উঠতে না উঠতে জাওয়াদের প্রভাবে গত শনিবার থেকে ফের শুরু হয় বৃষ্টিপাত ।রবিবার সারা দিন রাত কোথাও ভারী আবার কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাত হয় ।আর তাতেই মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে জেলার চাষিদের ।জেলার জামালপুর,রায়না,ভাতার,আউশগ্রাম, গলসী , মেমারী সহ সর্বত্রই কমবেশী আলুর জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে।এখানকার চাষিদের বক্তব্য তাঁদের আলুজমি জলে ডুবে যাওয়ায় আলু চাষ সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল । সরকার তাঁদের পাশে না দাঁড়ালে তাঁরা সর্বসান্ত হয়ে যাবেন বলে দাবি করেন ।  কৃষি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এবার নিম্নচাপে  সবথেকে বেশী বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলার রায়না ১ ও জামালপুর ব্লকে। উপ কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান ,রায়ানা ১  ব্লকে ১৩০ মিলিমিটার , জামালপুর ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন , জেলার জামালপুর ব্লক ছাড়াও মেমারি ১-২,কালনা ১-২,বর্ধমান ১-২ ব্লকে  প্রচুর আলুচাষ হয় । জেলার ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা থাকে । তার মধ্যে ৩২ থেকে ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের জন্য জমিতে আলু বীজ  বাসানো হয়ে গিয়েছিল । রায়না ও গলসিতে যেহেতু পাকা ধান একটু দেরিতে জমি থেকে তোলা হয় তাই ওইসব ব্লকে ধান চাষে ক্ষতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে । আলু ও ধান জমি থেকে যত দ্রুত সম্ভব জল বার করে দেবার ব্যবস্থা করার কথা বলেন উপ কৃষি অধিকর্তা । একই সাথে তিনি সকল চাষিদের বীমার আওতাভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান । জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।তার কারণে জমিতে জল জমে ধানের পাশাপাশি আলু ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 
এদিন জামালপুরে বিধায়ক আলোক মাঝি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি  মেহেমুদ খাঁন , কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক ,ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীবুল ইসলাম খাঁন , বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার ও জেলাপরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল কে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরের চাষ জমির অবস্থা খতিয়ে দেখেন সভাধীপতি । তিনি জামালপুর ব্লকের সকল চাষিদের শস্যবীমার আওতা ভুক্ত হবার আহ্বান জানান ।একই সঙ্গে তিনি জানিয়েদেন , এদিনই তাঁরা  চাষীদের ক্ষয়ক্ষতি ও চাষিদের শস্যবীমার আওতাভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে 
মিটিংয়ে বসবেন । তিনি বলেন, সব কৃষককে শস্যবীমার আওতায় আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীও চেষ্টা করছেন। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন , সরকার ধান চাষের বীমা করিয়ে দেয় । কিন্তু আলু চাষে যুক্ত চাষিদেরকেই বীমা করতে হয় । যে আলু চাষীরা বিমা করিয়েছেন তারা ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন ।চাষের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে । সবিস্তার রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হবে ।  ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে সরকার থাকবে বলে মহম্মদ ইসমাইল আশ্বস্ত করেন । জামালপুরের আলু চাষি  সীতারাম দে, দেবগোপাল দাস বলেন, এক বিঘে জমিতে আলু চাষ করতে এবছর গড়ে খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তাঁদের এলাকার  চাষিদের কেউ ১০ বিঘা , কেউ ৭ বিঘা আবার কেউ ৫ বিঘা জমিতে আলু বীজ বসিয়ে ফেলেছেন । এখন সব জলে গেল।দেবগোপাল দাস বলেন,এখন যা পরিস্থিতি ফের নতুন করে আলু বীজ  বসাতে হবে।সরকার পাশে না দাঁড়ালে আলু চাষিরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না  । জামালপুর ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীবুল ইসলাম  বলেন ,জামালপুর ব্লকে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয় । তার মধ্যে ৬৭ হাজার ৫০০ বিঘা জমির  আলুচাষে  ক্ষতি হয়েছে ।পাশাপাশি জামালপুরে ৫ টি পঞ্চায়েত এলাকার ১৮ শো হেক্টর জমির আমন ধান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এই রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হয়েছে বলে ব্লক কৃষি আধিকারিক জানিয়েছেন । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।